ব্যবসা এমন একটি আয়ের উৎস যেটি আপনি একবার দাঁড় করাতে পারলে আপণই সহজেই অই ব্যবসা দ্বারা আপনার জীবন আপনি সহজেই পরিচালনাকরতে পারবেন । আজকে আমি আপনাদের জানাবো কিভাবে দশ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে ২৫ টি ব্যবসা শুরু করবেন।
দশ হাজার টাকায় শুরু করে আবজনক করা কি আসলেই সম্ভব এটা আসলে অনেকেই ভেবে থাকবেন যেখানে জিনিসপত্রের দাম লাগামহীন ভাবে বেড়ে যাচ্ছে সেখানে সামান্য টাকা দিয়ে কি ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। আজকে আমি আপনাদের সেই কয়েকটি ব্যবসা সম্পর্কে জানাবো যেগুলো দশ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করা সম্ভব।
অনলাইন গিফট শপ
১০ হাজার টাকার ব্যবসা আইডিআর শীর্ষে রয়েছে গিফট শপ বর্তমানে দেশে প্রতিনিয়ত অনলাইন শপিং এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই সাথে আমরা নিজেদের প্রিয়জনদের বিভিন্ন বিশেষ দিনে গিফট করে থাকি যা আজকাল খুবই প্রচলিত একটি বিষয় অনলাইন শপিং এর প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ার কারণে মানুষ অনলাইনে গিফট বিক্রি করছে।
এসব থেমে রয়েছে শোপিস, ফু চকলেট, কাস্টমাইজ উপহার ইত্যাদি গিফট হিসেবে খুবই জনপ্রিয় এই ব্যবসাটি আপনি প্রাথমিক পর্যায়ে ১০ হাজার টাকায় শুরু করতে পারেন। শুধুমাত্র একটি ফেসবুক পেজ খুলে সেটার মাধ্যমে প্রচার করে আপনি ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন
ফুচকার ব্যবসা
আমাদের দেশে সকল বয়সের অধিকাংশ মানুষ ফুচকা খেতে খুব পছন্দ করে। আপনি চাইলে জনসমাগম হয় এরকম একটি নির্দিষ্ট স্থান দেখে ফুড কার্ড দিয়ে ছোট করে ফুচকার দোকান দিতে পারেন।
কাজের মধ্যে লজ্জার কিছু নেই আর ফুচকার ব্যবসা বর্তমানে অধিক লাভদায়ক এবং এই ব্যবসায়ী লোকসান হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম অনেকেই এই ব্যবসা করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
সাধারণত দেখা যায় একজন ফুচকা ব্যবসায়ীরাও মাসিক আয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে সঠিক জায়গায় আপনার ফুড কার্ডটি বসাতে পারলে আপনার মাসিকায় ৫০০০০ টাকার অধিকও হতে পারে।
মোবাইল রিচার্জ এর দোকান
মোবাইল রিচার্জ করা অথবা কোন অনলাইন ব্যাংকিং এর থেকে টাকা উত্তোলন করা, এটি এখন বাংলাদেশে প্রান্তরিত হয়েছে এ ব্যবসা করার জন্য আপনার বিশাল বড় কোন দোকানের প্রয়োজন নেই।
আপনি চাইলে আপনার গ্রামের বাজারে কিংবা শহরের যে কোন স্থানে একটি ছোট্ট টেবিল চেয়ার নিয়েও এ ব্যবসা শুরু করতে পারেন। একটি মোটামুটি মানে রিচার্জের দোকান থেকে খরচ বাদ দিয়ে মাসিক ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব
যে প্লেসে একটি চেয়ার টেবিল বসিয়ে ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগের মধ্যে ব্যবসাটি শুরু করে দিতে পারেন এ ব্যবসায় লসের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তাই আপনি এই ব্যবসাটিও করতে পারেন।
ফুড কার্ট বা ফুডভ্যান
আমরা রাস্তার পাশে বিভিন্ন ছোট ছোট খাবারের ফ্যান দেখতে পাই অল্প পরিমাণ খাবার আইটেম দিয়েই ভালো খাবার পরিবেশন করা হয় যার মূল্য থাকে তুলনামূলক কম। তাই মানুষ এই খাবারগুলোতে আকর্ষিত হয়ে থাকে ভালো মানের খাবার আইটেম দিলে এসব গ্রাহকরা রিপিট কাস্টমার হয় এবং দোকানের বিক্রিও বাড়ে।
আপনি চাইলে একটি ছোট্ট ভ্যান নিয়ে আপনার ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন এতে আপনার ১০০০০ টাকার বিনিয়োগের মধ্যে খুব সহজেই হয়ে যাবে ফুড কার্ট টি কোন জায়গায় রাখবেন যেখানে জনসমাগম হয় এবং পরিবেশবান্ধব জায়গায়।
কাগজের ঠোঙার ব্যবসা
দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করা বিভিন্ন জিনিসপত্র আমরা দোকান থেকে কাগজে ঠোঙায় করে কিনে নিয়ে আসি যার জন্য দেখা যায় কাগজের ঠোঙার চাহিদা মার্কেটে বিশাল আকারে রয়েছে পলিথিনের ব্যবহার অনুমোদিত না বিধায় সামনে আরো বাড়বে ধরে নেওয়া যায় যদি কাগজের ঠোঙা বানিয়ে বিক্রি করার ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
আপনি খুব সহজেই একটা ব্যবসা দাঁড় করিয়ে ফেলতে পারবেন। কাটিং মেশিন হলে আপনি ঘরে বসে একটি ব্যবসা শুরু করতে পারবেন এর জন্য আপনার কোন বড় একটি দোকানের প্রয়োজন নেই আপনি ঘরে বসে মার্কেটিংয়ে নেমে পড়তে পারবেন।
এতে আপনার প্রাথমিক খরচ কম থাকবে প্রাথমিক অপারেটিং খরচ কম হলে সেটি আপনার ব্যবসায় টিকে থাকতে সাহায্য করবে পরে আপনি আপনার কাজের জন্য কর্মী রেখে দিতে পারবেন আপনার ব্যবসা বড় হলে নিজের ব্র্যান্ড এবং নাম দিয়ে বিভিন্ন ডিজাইন কোয়ালিটির কাগজের প্যাকেট বাজারজাত করতে পারবেন।
জুস বারের ব্যবসা
জুস বারের ব্যবসাও কোন মুক্ত স্থান রাস্তা বা পার্কের পাশেই আপনারা চাইলে একটি জোস বাদ দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এটির জন্য আপনার বড় বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই বছরের বারোমাসি জুস বিক্রি হয়ে থাকে কিন্তু সাধারণত গরমকালে এই ব্যবসাতে ম্যাক্সিমাম বিক্রি হয়ে থাকে গরমকালকে এই ব্যবসার পিক সিজন বলা হয়।
এই ব্যবসাটি মোটামুটি 40% এর কমবেশি লাভ হয়ে থাকে তাই ১০০০০ টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়ার মধ্যে একটি অন্যতম পছন্দের ব্যবসা।
পুরনো বইয়ের ব্যবসা
পুরনো বইয়ের ব্যবসা করে আপনি বই প্রেমী মানুষদের কাছে পুরনো বই বিক্রি করে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যেমন নীলক্ষেত গুলিস্তানে পুরনো বইয়ের চাহিদা রয়েছে সেখানে আপনি চাইলে দশ হাজার টাকার মধ্যে নিজের ব্যবসা গুছিয়ে পরিয়ে নিতে পারেন।
এ ব্যবসাটি অনলাইনে আপনি বিশেষভাবে করে বিভিন্ন বিখ্যাত পুরনো বইয়ের কালেকশন একাডেমিক রেফারেন্স বই ইত্যাদির চাহিদা বা গ্রাহক সবসময় থাকে। এ সমস্ত বইয়ের গ্রাহকরা সাধারণত অনলাইনে বেশিরভাগ খোঁজাখুঁজি করে তাই আপনাকে অনলাইনে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করলে বিক্রি করতে সুবিধা হবে।
আপনার যদি কালেকশন ভালো হয় এবং ঠিকঠাক প্রচার হয় তবে এ ব্যবসাটি থেকে আয় করা আপনার জন্য খুবই সহজ হয়ে যাবে কিন্তু প্রথমে আপনাকে এটিকে দাঁড় করানোর জন্য পরিশ্রম করতে হবে নয়ত আপনি কখনোই সফল হতে পারবেন না কিন্তু ১০ হাজার টাকার ব্যবসায় আইডিয়ার মধ্যে এটি একটি ইউনিক আইডিয়া।
কাঁসা ও পিতলের ব্যবসা
কাঁসা পিতলের ব্যবসা সম্পর্কে জানতে পড়তে থাকুন। কাঁসা পিতলের আসবাবপত্রের দাম চাহিদা দুটোই দিনের বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ব্যবসাটি আপনি ছোট আকারে শুরু করে বড় মাপে পরিণত দিতে পারেন তাই আপনি দশ হাজার টাকায় ব্যবসা আইডিয়ার মধ্যে এটি অবশ্যই যোগ করতে পারেন।
খেয়াল রাখতে হবে আপনার পন্যর কোয়ালিটি যেন ভাল হয় তাতে আপনার পন্যর মান ঠিক থাকায় মানুষের একটি আলাদা আগ্রহ কাজ করবে তখন সে জানবে আপনি আসলেও ভালো মানের পন্য মানুষকে দিয়ে থাকেন।
টেইলারিং এর ব্যবসা
টেইলারিং এর ব্যবসাও আপনার জন্য সফলতা এনে দিতে পারে আপনার শুধু একটি সেলাই মেশিন এবং সেলাই এর জন্য সব জিনিসপত্রের প্রয়োজন সেগুলো শুধু আপনাকে ক্রয় করতে হবে। ছেলে হোক মেয়ে হোক দশ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলে এই ব্যবসাটি ঘরে বসেই করতে পারে।তবে ব্যবসাটির সফলতা কাজের দক্ষতার উপর নির্ভরশীল।
আপনার পণ্য ভালো হয় তাহলে আপনার কাস্টমাররা আপনাকে নতুন কাস্টমার পেতে সাহায্য করবে। তবে ব্যবসাটি বিনিয়োগ হলো ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ এবং এটি দশ হাজার টাকার ২৫ টি ব্যবসায় আইডিয়ার মধ্যে অন্যতম লাভজনক ব্যবসা।
হোম মেড ফুড ডেলিভারি
হোম মেড ফুড ডেলিভারি আপনি বাড়িতে তৈরি করা বিভিন্ন রান্না বিভিন্ন ছাত্রাবাস বা হোটেলে যারা থাকে তাদের কাছে বিক্রি করতে পারেন এর জন্য আপনার বড় জায়গা বা একটি হোটেলের দরকার নেই আপনি বাড়িতে বসে থেকে রান্না করবেন। একজন ডেলিভারি করবে হোক সেটা আপনার বাড়ির কেউ বা আপনি একজনকে নিয়োগও দিতে পারেন।
এ ব্যবসার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হল খাবারের স্বাদ ঠিক রাখা। এবং গুণগত মান বজায় রাখা। নয়ত তারা অবশ্যই আপনার থেকে খাবার নেবে না আপনার খাবাররের স্বাদ যত বেশি ও গুণগত মান যতটা ভালো হবে ততই আপনার বিক্রিতে সুবিধা হবে।
ফুড ডেলিভারি
ফুড ডেলিভারি আপনি বাড়িতে বসে থেকে দোকান থেকে খাবার অর্ডার করে খাওয়া মানুষের কাছে খাবার খুব সহজেই বিক্রি করতে পারবেন আপনি চাইলেই খুলে সার্ভিস এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসাটি দাঁড় করানো অনেক চ্যালেঞ্জিং কিন্তু একবার দাঁড়িয়ে গেলে সফলতা আপনার দরজায় কড়া নাড়বে।
আপনি আপনার ফুড ডেলিভারির ব্যবসা চালু করতে পারলে ভবিষ্যতে কিছু লোক নিয়োগ দিতে পারেন আপনার কাজের জন্য। এই ধরনের কাজ করে এমন কিছু কোম্পানি কাজ করছে। তার মধ্যে বিশ্বস্ত কোম্পানি হলোঃ
ফুড পান্ডা আপনিও শুরু করতে পারলে আপনার ব্যবসাও একদিন এরকম ভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু আপনি পরিশ্রম পরিশ্রম না করলে কাঙ্খিত ফল পাবেন না।
ট্রাভেলিং এর ব্যবসা
ট্রাভেলিং এর ব্যবসা করার জন্য আপনার সর্বপ্রথম একটি এজেন্সির সাথে যোগদান প্রদান করতে হবে আপনি যত অধিক মূল্য এইসব বিক্রি করতে পারবেন নিজের মুনাফা তত বৃদ্ধি হতে থাকবে পরবর্তীতে আপনার ব্যবসার লাভের পরিমাণ বাড়লেও বড় বিনিয়োগের সংস্থান হলে নিজেই একটা ট্রাভেল এজেন্সি খুলতে পারবেন।
তাই এটিও একটি ইউনিক ব্যবসা আইডিয়া। এই আইডিয়াটি কাজে লাগিয়ে আপনি সহজেই আয় করতে পারবেন। এটির আবার অনেক ভাগ রয়েছে যেমন ঃ
টিকেট কেটে দেয়া ঃ বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ কোথাও ঘুরতে গেলে ট্রাভেল এজেন্সির থেকে টিকেট সংগ্রহ করে। আপনি তাদের টিকেট কেটে দিয়ে আয় করতে পারেন।
হোটেল বুকিং ঃ বিভিন্ন জায়গা থেকে আশা পর্যটকরা ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে হোটেল বুকিং করে থাকে।
এগুলো সহ আরো কম্বো প্যাকেজ বিক্রি করে থাকে ট্রাভেল এজেন্সি। কম্বো প্যাকেজে তারা হোটেল বুকিং টিকেট কেটে দেয়া সহ সসব করে দেয়।
ট্যুর গাইড
ট্যুর গাইড এর কাজ কি আপনারা অনেকেই জানেন । পর্যটনী জায়গা পর্যটকদের ঘুরে দেখানো আর এর জন্য পর্যটকরা তাকে অর্থ দিয়ে থাকে । আপনি কি এমন কোন স্থানে বসবাস করেন যেখানে পর্যটক অনেক পরিমাণে আসে তবে আপনি কোন দিক না ভেবেই একজন টুর গাইড হয়ে যেতে পারেন।
এর জন্য কোন বিশেষ অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই। আর এটির জন্য আপনার ১০ হাজার টাকার মূলধন থাকলেই চলবে। তাই এটিও একটি ইউনিক ব্যবসা আইডিয়া।
কাস্টমাইজ জুয়েলারি
কাস্টমাইজ জুয়েলারি ১০ হাজার টাকার একটি অন্যতম ব্যবসা আইডিয়া এটির জন্য আপনার ইউনিক ডিজাইন বানিয়ে অনলাইনে নিজের ডিজাইনগুলো বিক্রি করে ভালো অংকের মাসিক আয় অর্জন করতে পারবেন।
এ ব্যবসাটি নিজের দক্ষতার উপর নির্ভরশীল। একই সাথে বেশি কাজ পাওয়ার জন্য যোগাযোগ দক্ষতাও থাকা লাগবে।
অনলাইনে বই বিক্রি
অনলাইনে বই বিক্রি দশ হাজার টাকার মধ্যে আপনার জন্য অন্যতম হতে পারে এখানে আপনি পাইকারি বাজার থেকে কম টাকায় বই কিনে এনে নিজের দোকানে মার্কেটের দাম অনুযায়ী অনলাইনে বই বিক্রি করতে পারবেন। আপনার ভিন্ন ভিন্ন বইয়ের কালেকশনের মাধ্যমে গ্রাহকদের আকর্ষিত করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে আপনার বইয়ের কালেকশন অবশ্যই ভালো হতে হবে।
লেখকের শেষ কথা
আশা করি দশ হাজার টাকার মধ্যে ১৫ টি ব্যবসার যেসব আইডিয়া সম্পর্কে জানলেন এগুলোর থেকে আপনি ইনকাম করতে ব্যর্থ হবেন না। কিন্তু আপনাকে প্রত্যেকটি ব্যবসাতেই পরিশ্রম এবং বুদ্ধি খাটাতে হবে নয়তো এর মধ্যে কোন ব্যবসায় আপনার জন্য না যদি আপনি পরিশ্রম না করেন। আপনি যদি পরিশ্রম করেন তবে অবশ্যই কাংখিত ফল পাবেন। ধন্যবাদ 😊😊
প্লাস পয়েন্ট আইটির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url