গর্ভাবস্থায় পেটের বাম পাশে ব্যথা হওয়ার কারন
গর্ভাবস্থায় পেটের বাম পাশে ব্যথা হওয়ার কারন বর্তমানে খুবই আলোচনাকৃত একটি বিষয় আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো গর্ভবতী মায়ের পেটের বাম পাশে ব্যথা হওয়ার কারণ সম্পর্কে এবং এ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য। তবে যতই ব্যাথা হোক না কেন গর্ভবতী মায়ের তার সহ্য করার ক্ষমতা সব সময় থাকে ।
তবুও কিছু নির্দেশনা মেনে চললে গর্ভাবস্থায় পেটের বাম পাশের ব্যথাও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় পেটে ব্যথা বাম পাশে ব্যাথা হওয়ার কারণ এবং তা নিয়ে আরো বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে। তবে জানতে হলে আমাদের সঙ্গেই থাকুন ।
পোস্ট সূচিপত্র - যে অংশ থেকে পড়তে চান ক্লিক করুন
- গর্ভাবস্থায় পেটে রাউন্ড লিগামেন্ট জনিত ব্যথা হওয়ার কারন ।
- গর্ভাবস্থায় পেট শক্ত হয়ে গেলে করণীয় ।
- গর্ভাবস্থায় তলপেট ভারি লাগে কেন ।
- গর্ভাবস্থায় কোমরে ব্যথা হলে কি করবেন ।
- গর্ভাবস্থায় আরো যে পাঁচটি কারণে পেটে ব্যথা হতে পারে ।
গর্ভাবস্থায় পেটে রাউন্ড লিগামেন্ট জনিত ব্যথা হওয়ার কারন
কারণ সমূহ
গর্ভাবস্থায় পেটে রাউন্ড লিগামেন্ট জনিত ব্যথা হলো জরায়ুর গোলাকার লিগামেন্ট এর সাথে যুক্ত ব্যথা এই সমস্যা সাধারণত গর্ভাবস্থায় দ্বিতীয় ত্রই মাসিক মাসিক হইতে প্রসব পর্যন্ত হতে থাকে । এটি প্রসবের পর সম্পূর্ণভাবে নির্মূল হয়ে যায় পরবর্তীতে আর কোন সমস্যা হয় না।
যখন লিগামেন্ট অনেক চাকরি তো ভাবে সংকুচিত হয় তখন খিচুনি বা ক্র্যাম্পের কারণে জরায়ু প্রসারিত হতে থাকে ।গর্ভবতী নারী রান্না করতে গেলে তখন লিগামেন্টের উপরে চাপ পড়ে যার ফলে এটি প্রসারিত হতে থাকে শারীরিক পরিশ্রম বা অতিরিক্ত নড়াচড়ার কারণে অধিক প্রসারিত হয়ে যেতে পারে যার ফলে অতিরিক্ত ব্যথা অনুভূত হয়।
গোলাকার লিগামেন্ট ক্যানেল নিষ্কাশন জারি শিরা থেকে শুরু হয় গর্ভাবস্থায় ডিম বাসায় গিয়ে শেষ হয়। জরায়ু বৃদ্ধা কালী গ্রামের জড়িত অন্যান্য প্যাথলজি আর এল পি হতে পারে।
চিকিৎসা বা সস্থির উপায়
ব্যাথা নাশক এসি মিনোফেন বা প্যারাসিটামল করা নিরাপদ। এ ওষুধগুলো সাধারণত ব্যথা নাশক হিসেবে কাজ করে থাকে। তাপ প্রয়োগ কোন গামছা গরম পানিতে চুবিয়ে সেটি দিয়ে ছেক দেওয়া যেতে পারে। বা গরম পানি দিয়ে গোসল করা যেতে পারে।
অবস্থান পরিবর্তন করা শারীরিক বিশ্রাম এবং দীর্ঘক্ষণ থাকা ভারী কাজ থেকে দূরে থাকা এবং সহজ কাজকর্মগুলো করা। গর্ভাবস্থায় কিছু ব্যায়াম করার নিয়ম আছে সেগুলো নিয়মিত করলে ব্যথা তীব্রতা কমে যায়।
গর্ভাবস্থায় পেট শক্ত হয়ে গেলে করণীয়
গর্ভাবস্থায় এই টানটান বাপের শক্ত হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক একটি ব্যাপার তবে এটিও একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে সেই সাপেক্ষে এটি সারানোর ঘরোয়া কিছু উপায় নিচে তুলে ধরা হলো ::
পর্যাপ্ত পানি পান করা: ফ্রিজের পানি সম্পদ তাহলে পেট টানটান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে তাই গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পানি পান করার চেষ্টা করুন। একজন সুস্থ স্বাভাবিক গর্ভবতি নারীর প্রতিদিন ঘরে দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করা প্রয়োজন ।আপনাকে সারা দিন কাপ হিসেবে 8 থেকে 12 গ্লাস পানি পান করতে হবে। তবে এই বিষয়ে যদি ডাক্তার কিছু পরামর্শ আপনাকে দান করে তবে সেটি মেনে আপনাকে চলতে হবে।
খাবার গ্রহণে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে: কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে পেট শক্ত হয়ে যেতে পারে তাই অল্প অল্প করে বেশ কয়েকবার করে দিনে খান শরীরে আসে পরিমাণ বাড়িয়ে তুলুন ভাজাপোড়া বা কোমার পানি হতে এড়িয়ে চলুন।
নিয়মিত শরীরচর্চা করুন: গর্ভবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম খাবার হজমে আপনাকে সাহায্য করতে পারে এছাড়া ব্যায়াম আপনার শরীরের বিভিন্ন জটিল ছাড়াতে সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও গর্ভস্থ নিয়মিত ব্যায়াম করা হতে নারীর জন্য নিরাপদ ও কার্যকর। এটি নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা বাড়াতে সাহায্য করে।
অবস্থান পরিবর্তন করুন: এক জায়গায় ধীর ধরে বসে থাকা উচিত নয় নিজের অবস্থান পরিবর্তন করতেই থাকুন দাঁড়িয়ে থাকলে শুয়ে পড়ুন শুয়ে থাকলে বসে পড়ুন বসে থাকলে দাঁড়িয়ে পড়ুন যেকোনো অস্বস্তিকর দেহভঙ্গিতে এমন হতে পারে দ্রুত জায়গা পরিবর্তনে এমন হতে পারে।
বসা থেকে ওঠার সময়ও তাড়াহুড়ো করে আস্তে ধীরে উঠুন বসা কিংবা শোয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনে অনুযায়ী বালিশ বা কুশন ব্যবহার করে আরামদায়ক অবস্থান তৈরি করে নিন।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন: প্রতিদিন পরিমাণে বিশ্রাম নেয়ার চেষ্টা করুন সাধারনতা একজন গর্ভবতী নারীকে দৈনিক সাত থেকে নয় ঘন্টা ঘুমানো দরকার এর চেয়ে কম ঘুমালে আপনার গর্ভে শিশুর জন্য ঝুঁকে পূর্ণ হতে পারে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে তাই এমনিতে ঘুম ও বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
গরম সেঁক বা মালিশ নিন: মাংসপেশের ব্যথায় হালকা মালিশের উপকার হতে পারেন তাই হ্যাঁ গরম কিছু বা গামছা গরম পানিতে ভিজিয়ে অথবা গরম পানি দিয়ে গোসল করে ফেলতে পারেন তবে খুব বেশি গরম হতে এড়িয়ে চলুন।
গর্ভাবস্থায় তলপেট ভারী লাগে কেন
ঘর আছে শুরুতেই দেহের খরন বৃদ্ধি পায় তার হাত ধরে পাকস্থলী থেকে খাবার নিচে নেওয়ার প্রক্রিয়াধীন হয়ে যায় এর ফলে পেট ভারী হতে থাকে। এ সময় খারাপ খাবারের পরিমাণ নয় বাড়াতে হয় পুষ্টির মান আবার পুষ্টিকর না হলে শিশুর উপর প্রভাব ফেলে শিশুর স্বাস্থ্য ভালো থাকে না।
প্রতিটি খাবার গর্ভবতী মায়ের জন্য পুষ্টিকর হওয়া উচিত কারণ পুষ্টিকর খাবার খাবে বাচ্চার বিকাশ ততটাই ভালো হবে আর ব্যায়াম এই সময় গর্ভাবস্থায় করা যাবে এরকম কিছু ব্যয়ামও রয়েছে এগুলো করলে করা যেতে পারে।
তলপেট ফোলার সমস্যার সমাধান: সহজ হওয়া জন্য হয় এমন পুষ্টিকর খাবার খান পেট একটু খালি রেখে রেখে খাবার খান একটু পর পর খাবার খান যাতে আপনার হজম হতে সুবিধা হয় বেশি করে একেবারে খেয়ে ফেললে বদ হজম হয়ে যেতে পারে। বারবার খিদে পেলে বারবারই খাবেন তবে অল্প অল্প করে।
- সবুজ শাকসবজি খান পর্যাপ্ত রাতদিন মোটামুটি সচল থাকলে ব্যায়াম করে নিতে পারেন করলে গ্যাস হবে না কিন্তু পেট পরিষ্কার থাকবে এবং ১০-১৩ গ্লাস পানি খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
- মিষ্টি কম খাওয়ার চেষ্টা করবেন খুব বেশি মিষ্টি খেলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা থাকে বেশি ফল খাবেন না এতে ওজন বেড়ে যেতে পারে
গর্ভাবস্থায় কোমরে ব্যথা হলে কি করবেন
নিয়মিত ব্যায়াম করলে বিভিন্ন পেশী শক্তিশালী ও মজবুত হয় নিয়মিত গরব অবস্থায় ব্যায়াম করেন তারা কোমর ব্যাথার সাথে সহজে মানিয়ে নিতে পারবেন।
- শারীরিক পরিবর্তন ও অতিরিক্ত ওজনের কারণে পিঠের চাপ থাকে অতিরিক্ত সময় কাজ করা থেকে বিরত থাকুন বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে বা না থেকে শুয়ে থাকুন।
- একটানা অনেকক্ষণ বসে থাকলে কোমরের ব্যথা আরো বাড়বে।
সতর্কতা:নাড়াচড়া বা চলাচলে কোন তাড়াহুড়ো করবেন না বসে থাকা অবস্থায় তাড়াহুড়ো করে শুয়ে পড়বেন না। ঘুমানোর সময় অতিরিক্ত বালিশ পিঠে পেটের নিচে বালিশ রাখতে পারেন চেষ্টা করুন যে কোন পাশ ফিরে ঘুমাতে সোজা হয়ে নয়।
চিকিৎসা :ব্যথার জায়গায় বরফ দেবা ঠান্ডা পানি দিয়ে সেঁক দিন কিছুক্ষণ। গরম কাপড় দেশে এক দিলেও ভালো ফল পাবেন প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিটের মত করে দেখতে পারেন তবে পেটের ওপর ঠান্ডা বা গরম শেক দিবেন না শিশুর ক্ষতি হতে পারে।
এটার বৃদ্ধির কারণে এ সময় সোজা হয়ে হাটা করে কতটা সুন্দর সোজা হয়ে হাঁটতে এত কোমর কাপটা একটু হলেও কমে যাবে স্বস্তি পাবেন।
কোমর ব্যাথা দূর করতে ম্যাসাজ উপকারী যখন বেশি ব্যথা হবে যখন খালি হাতে কোমরে হালকা করে চাপ দিয়ে দিয়ে মেসেজ করুন।
সোনা গুলো মানলে ওপরে কোমর ব্যথা হয়তো নিরাময় হবে না আমগুলো মেনে চললে ব্যথা তীব্রতা অবশ্যই কমে যাবে।
গর্ভাবস্থায় আরো যে পাঁচটি কারণে পেটে ব্যথা হতে পারে
পেটে বিভিন্ন ধরনের ব্যথা হতে পারে আবার তীক্ষ্ণ ধরনের ব্যথা হতে পারে তেমন হয় তবে আপনি বিশ্রাম নিয়ে সেটি পারেন নিচে পাঁচটি কারণ উল্লেখ করা হলো :
ইমপ্ল্যান্টেশনঃ মায়ের পেটে ভ্রুন বড় হতে হতে পূর্ণাঙ্গ শিশুকে পরিণত হয়ে থাকে। গর্ভধারণের পর পর এই ভ্রমণ যখন প্রথমবারের মতো জরায়ুতে নিজের জায়গা করে নেয় তখন সেই ঘটনা কি ইমপ্ল্যান্টেশন বলে।
এ সময় আপনার মাসিকের ব্যথার মতো ব্যথা থাকতে পারে আপনার মাসিক হওয়ার কথা সাধারণত তার কাছাকাছি তুই একদিন ধরে এমন হালকা ব্যথা চলতে থাকবে তাই মাসিকের সময় এমন ব্যথার পরেও প্রেগনেন্সি টেস্ট করে আপনি গর্ভবতী হয়েছেন কিনা চেক করে দেখুন।
ক্রাম্পিং বা পেট কামড়ানোঃ গর্ভে বাড়ন্ত শিশুকে জায়গা দেওয়ার জন্য উৎসাহিত হতে থাকে পেটের অন্যান্য অঙ্গকে চাপ দেয় এ কারণে পেট ব্যথা হওয়াটা স্বাভাবিক এ ধরনের ব্যাথা সাধারণত তীব্র ধরনের হয় না কিছুক্ষণ বিশ্রামের মাধ্যমে এটি ঠিক হয়ে যায় আবার আপনার বদহজমের কারনেও আপনার পেটে ব্যথা হতে পারে তাই বুঝেশুনে ব্যবস্থা নিন।
গ্যাস পেট ফাঁপা বা কোষ্ঠকাঠিন্যঃ গর্ভধারণের ফলে আপনার অনিয়মিত কিছু খাদ্য গ্রহণের ফলে পেট ফাঁপা বা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে এজন্য অতিরিক্ত কোনো খাবার গ্রহণ করবেন না অল্প অল্প করে খাবার গ্রহণ করবেন এবং বারবার খাবার খাবেন এতে পেট ব্যথা বা কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় হয়ে যাবে।
লিগামেন্টের ব্যথাঃ লিগামেন্টের মত কিছু টিস্যুর মত শরীরের বিভিন্ন হাড় বা জয়েন টেলিগামেন্টের মাধ্যমে একে অপরের সাথে সংযুক্ত হয়ে থাকে। গর্ভাবস্থায় জরায় দ্রুত পরিবর্তন এর মধ্য দিয়ে পাশে থাকা বেশি ভাল্লিগামেন্ট গুলো জরায়ুকে সাপোর্ট দিতে গিয়ে কিছুটা টান খেয়ে পুরু হয়ে যায় ।
এই জন্য আপনার পেটে ব্যথা প্রায়ই আশা করতে থাকবে সেটির সাথে আপনাকে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে হবে রাউন্ড লিগামেন্ট টান পড়ে পেট ব্যথা অতিরিক্ত হতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখুন। তাহলে লিগামেন্টের ব্যথা সম্ভবত ১৮ থেকে ২৫ সপ্তাহের মাঝে দেখা যায়।
ব্রেক্সটন হিক্স সংকোচনঃ অনেক গর্ভবতীর মত আপনিও ব্রেক্সটন হিক্স সংকোচন অনুভব করতে পারেন। এ সময় পেট কামড়ানো বা কোন অংশে টান লাগার মতো অনুভূতি হয় জরায়ুর অনিয়মিত সংকোচন এবং প্রসারণের কারণে সাধারণত এ সমস্যাটি হয়ে থাকে এটি খানিকটা প্রসবের ব্যথার মতো হতে পারে এটি আপনার গর্বের শিশুর জন্য নিরাপদ তাই চিন্তার কোন বিষয় নেই।
শেষ কথা
আজকের আর্টিকেল আমরা পেটের বাম পাশে ব্যাথা সহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি এরকম আরো বাংলা আর্টিকেল পড়তে চোখ রাখুন প্লাস পয়েন্ট আইটিতে ধন্যবাদ 🥰🥰।।।
প্লাস পয়েন্ট আইটির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url